"ওই বেশ্যার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক
নেই।"অপূর্ব বাবু বলে ওঠেন।তিনি আরো বলেন "টাকার দরকার থাকলে আমাকে বলতে
পারতো তা না করে শরীর নিয়ে ফুর্তির খেলায় মেতে উঠা ওই নষ্টা মেয়ের দেহ
পোড়ানোর দায় তাদের নেই "।
"মেয়ে রাস্তায় পঁচুক।"পাড়ার সবার
তাই মত।পশু মরার গাড়ি এলে না হয় তুলে নিয়ে যাবে।সবাই তাই ভাববে নাই বা
কেনো পশুর মতন কাজই তো করেছে মিমি। পয়সার জন্য পুরুষদের কাছে গিয়ে নিজের
দাম ঠিক করতো সেটা আবার ভিডিও করে মোটা দামে বিক্রি করতো।এই মেয়ের এই
অবস্থা না হলে আর কার হবে?
এক সপ্তাহ আগে ঠিক এরকম এক দিনে
ডাক্তারবাবু বলে দেন কালকের মধ্যে একলক্ষ টাকা জমা না দিলে তার মার অপারেশন
হবে না আর অপারেশন না হলে পেশেন্ট মারা যাবে।অত টাকা কোথায় পাবে মিমি?মা
লোকের বাড়ি কাজ করে,বাবা তো কবেই মারা গেছে।ভরসা বলতে একমাত্র কাকা অপূর্ব
দে।সেও কোনো যোগাযোগ রাখে না , শহরে তার বড়ো ব্যাবসা ,মাঝেমধ্যে গ্রামে
আসে।
মিমি ছুটে যাই কাকার কাছে, টাকা
চাইতে।কাকা ব্যাবসা বোঝেন এমনি এমনি কি করে অত টাকা দেবেন কিন্তু সুন্দরী
ভাইঝি একটু ব্যাবসা বাড়াতে সাহায্য করলে তিনি দিতে পারেন টাকাটা।মিমি
প্রস্তাব পেয়ে চমকে ওঠে।কাকা বলে দেন এই কাজেই একমাত্র মিমি পারে তার মাকে
বাঁচাতে।মিমি সম্মত হই না।লজ্জা,ঘৃণাই কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে যাই সেখান
থেকে।হাসপাতালে গেলে ডাক্তারবাবু জিজ্ঞেস করেন" টাকা জোগাড় হলো কিনা?"মিমি
চুপ করে থাকলে ডাক্তারবাবু বলে ওঠেন "কাল সকালে এসে পেশেন্ট এর লাশ নিয়ে
যেতে।"মিমি ডাক্তারবাবুর পা ধরে বোঝাতে চাই তাদের অবস্থা।ডাক্তারবাবুর
শোনার সময় হয় না ১১নং বেডের পেশেন্ট এর কাছে যেতে হবে ওনাকে, তাদের
অপারেশনের টাকা জমা হয়ে গেছে।ত্রিশ মিনিট ওইভাবে কাঁদতে থাকে মিমি।সহসা
তার কি যেন মনে পড়ে, ছুটে যাই কাকার বাড়ি।কাকা তাকে দেখে হেসে বলে উঠেন"
জানতাম! তুই আসবি।"পাশের ঘরে যা ভালো কাজ করলে মার ওষুধের খরচাও দেবো।মিমি
কাঁদতে কাঁদতে কোনভাবে এগোতে থাকে।
ঘরে ঢুকে চমকে বলে ওঠে "ডাক্তারবাবু আপনি"
ডাক্তারবাবু হেসে বলেন "আরে তুই।এই
লাইনে আছিস বলতে পারতিস।মার অপারেশনের কোন টাকা লাগতো না।শুধু তুই আমার
হোয়ে যেতিস।আচ্ছা যাইহোক তাড়াতাড়ি সব খোল কাল আবার সকালে অপারেশন
আছে।বেশি সময় নেই হাতে।"
যাইহোক ডাক্তারবাবু আর বেশি অপেক্ষা
করলেন না ।নিজে হাতে সব কিছু খুলিয়ে দিলেন।মিমি যেনো তার হাতের পুতুল হয়ে
গেলো।একটু পর বিছানা রক্তে ভিজে গেলো মিমি চিৎকার করে উঠলো আবার চুপ ও হয়ে
গেলো।ডাক্তারবাবু আর মিমি দুজনেই একটু পর বেরিয়ে গেলো।কাকা হাসতে লাগলেন
ওরা যাবার পর আর নিজের মনে বলে ওঠেন সালা এক রাতে লাখ টাকা নিবি।কি এমন
শরীর তোর ।মিমি জানলো না তার জীবনে সর্বনাশের উপর সর্বনাশ ঘটে চলেছে।সবকিছু
ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেছেন অপূর্ব কাকা। বাজারে এখন রক্তাত্ত সিডির খুব
চাহিদা।ভালো টাকা আসবে এগুলো বিক্রি করে।
এতকিছু করেও কি শেষরক্ষা করতে পারলো
মিমি? না।তার মাকে ডাক্তারবাবু বাঁচাতে পারেননি।বলে গেলেন"I am sorry" সাথে
অবশ্য বলতে ভুললেন না একা লাগলে নিজের মনে করে তার ঘরে যেতে।মিমি চুপ করে
থাকে ।রাস্তায় বেরোতে কয়েকজন বলে ওঠে সালা এই মালটারই তো আজ দেখলাম।কি দিল
ভাই ।।।।আহহহহ।।।।মুখ দিয়ে বাজে ভঙ্গি করে ওঠে ছেলেগুলো ।মিমি চমকে ওঠে
সবাইকে তার জন্য এরকম বলতে দেখে।বাড়ি ফেরার পথে অবশ্য সে সব খবর পেয়ে যাই
এক জনের থেকে তার কাকা তার চরম সর্বনাশ করে দিয়েছে।তার জায়গা এখন সব
ছেলের মোবাইলে।বুঝতে পারে না সে কি করবে ।মনে পড়ে পাড়ার সবার কথা "এরকম
মেয়ে জন্মালে নিজের হাতে খুন করতাম" হঠাৎ যেনো সে বুঝে যাই কি করতে হবে
হাতে তুলে নেই ইঁদুর মরার বিস ।একটু পর মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে থাকে তার
মধ্যেই সে যেন বলার চেষ্টা করে"আমি বেশ্যা নই।" অবশ্য এই কথা বাইরে কেউ
শুনতে পাই না।এই কাতর স্বীকারোক্তি পৌঁছায় না অপূর্ব বাবুর মত
'শিক্ষিত,ভদ্রলোক' দের কাছে তারা তখন ব্যস্ত আবার কোন বেশ্যার সন্ধানে হইত
কোন হাসপাতালের দরজায়, কোন আদালতের বাইরে বা কোন বেসরকারি বিদ্যালয়ের
সামনে।
0 Comments